Ashwagandha-অশ্বগন্ধা গুঁড়া
অশ্বগন্ধা ছোট একধরনের গুল্ম, যাতে হলুদ রঙের ফুল হয়। এটা ভারত এবং উত্তর আফ্রিকাতে পাওয়া যায়। এটার জড় অথবা পাতার নির্জাস বা গুড়া বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।
রক্তের সুগার কমাতে অশ্বগন্ধা বেশকিছু গবেষণাতে দেখা গেছে অশ্বগন্ধা রক্তে সুগার কমাতে সাহায্য করে।
অশ্বগন্ধা ইনসুলিন লেভেল এবং পেশীর কোষে ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
কিছু গবেষণাতে এ ও দেখা গেছে অশ্বগন্ধা স্বাস্থ্যকর এবং ডায়াবেটিস আক্রান্ত উভয় মানুষের শরীরে, রক্তের সুগার লেভেল কমায়।
ক্যান্সার রোধে অশ্বগন্ধা
বেশকিছু টেস্টটিউব আর পশুপাখীর উপর গবেষণাতে দেখা গেছে অশ্বগন্ধা টিউমার সেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে, যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের উপর কার্যকরী হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে মানুষের উপর কোন গবেষনা সম্পন্ন হয়নি, নিকট ভবিষ্যতে হয়তো জানা যাবে।
কর্টিসোল এর লেভেল কমাতে অশ্বগন্ধা
কর্টিসোল স্ট্রেস হরমোর নামে পরিচিত, কারণ যখন আমাদের শরির কোন মানষিক চাপে থাকে বা রক্তে সুগারের লেভেল কমে যায় তখন এডরেনাল গ্ল্যান্ড কর্টিসোল রিলিজ করে।
অশ্বগন্ধা আপনার হতাশা, দুঃচিন্তা আর মানষিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এসব কম থাকলে মনযোগ বৃদ্ধি পাবে স্বাভাবিক। ঠিক এ কারণেই মনোযোগ বাড়ানোর জন্য অশ্বগন্ধা ব্যবহার হয়ে থাকে।
অশ্বগন্ধা কোলেস্টেরল আর ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
অশ্বগন্ধা টেস্টোস্টেরন বাড়াতে এবং ছেলেদের ফার্টিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে। মাসল বিল্ড করতে টেস্টোস্টেরন খুবই জরুরী একটা হরমোন। তাই যারা মাসল বিল্ড করতে চায় তাদের জন্য অশ্বগন্ধা যথেষ্ট উপকারী বলা চলে।
অশ্বগন্ধা মনোবল, সহনশীলতা, শক্তি এবং পেশী বাড়াতে সাহায্য করে।
অশ্বগন্ধা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা তীক্ষ্ণ করে এবং শরীরের ব্যাথা কমিয়ে ফিজিক্যাল এক্টিভিটির সময় সহনশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটা আমার নিজের উপর টেস্ট করে দেখেছি। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অশ্বগন্ধা খাই। সকালে জিম করতে গিয়ে আগের দিনের ব্যাথা কম থাকে, এনার্জিও পাই, বিশেষ করে হেভি লিফটের ক্ষেত্রে।
একই ভাবে বডি কম্পোজিশন ইমপ্রুভ করতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে।
পেশী বাড়াতে আর ফ্যাট পার্সেন্টেজ কমাতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে।
অশ্বগন্ধা আপনার ইমিউন সিস্টেম বুষ্ট করতে সাহায্য করে।
ঘুমের সমস্যা সমাধানে অশ্বগন্ধা।
রাতজাগা অভ্যাস অনেকের আছে, কেউ চাইলেও ঘুমাতে পারেনা। অশ্বগন্ধা ম্যাজিকের মত কাজ করে এক্ষেত্রে। আমার ঘুমের সমস্যা নাই। তবে সাউন্ড ঘুম কম হয়। যেমন বলেনা এক ঘুমে রাত শেষ। তেমন, আমি নিজে দুই সপ্তাহ ধরে রেগুলার খাচ্ছি। ঘুম তো হচ্ছেই, সাথে ফ্রেশ ঘুম। সারাদিন এক্টিভ ভাবে কাজ করার জন্য কোয়ালিটি ঘুম খুবই জরুরী। ঘুমের সমস্যা থাকলে অশ্বগন্ধা খেয়ে দেখতে পারেন।
থাইরয়েড এবং পিসিওএসে অশ্বগন্ধা
হরমোন ব্যালান্সে অশ্বগন্ধার জুড়ি নেই। তাই বোঝাই যাচ্ছে থাইরয়েডে অশ্বগন্ধা প্রচন্ড উপকারী। বিশেষ করে হাইপোথায়রডিজমে খুবই উপকারী। থাইরয়েড যাদের আছে তাদের মুড সুইং, ডিপ্রেশন এসবের সমস্যা সমাধানে অশ্বগন্ধার জুড়ি নেই। তবে যাদের হাসিমোটো থাইরডিটিস আছে তাদের ডাক্তারের পরামর্শে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে হবে। আরেকটা জিনিষ হল, থাইরয়েডে অনেকের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা উপকারী আবার অনেকের সমস্যা হয়। সেটা আপনি কিছুদিন খেয়ে দেখতে পারেন। যদি মনে হয় উপকার হচ্ছে কিছু কনটিনিউ করবেন আর সমস্যা মনে হলে বাদ।
পিসিওএস ও হরমোনাল সমস্যা, তাই বোঝা ই যাচ্ছে অশ্বগন্ধা উপকারী । অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা যাদের আছে তারা অশ্বগন্ধা খেয়ে দেখতে পারেন।
এবার উপসংহারে আসি।
উপরের সব গুনাবলী শুনে বোঝাই যাচ্ছে অশ্বগন্ধা খুবই উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ। সব ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধে অশ্বগন্ধার ব্যবহার লক্ষনীয়।
তবে সবার জন্য অশ্বগন্ধা নয়।
গর্ভবতী কেউ অশ্বগন্ধা নিতে পারবেনা। অশ্বগন্ধা গর্ভপাতের ঝুকি বাড়ায়।
যারা ব্রেস্টফিডিং করায় তারাও অশ্বগন্ধা নিতে পারবেনা।
অশ্বগন্ধা যেহেতু ব্লাড সুগার লেভেল আর রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই এসবের মেডিকেশন চললে তা এডজাষ্ট করতে হতে পারে। অর্থ্যাৎ মেডিকেশনের ডোজ কমাতে হবে।
থাইরয়েডের টা তো উপরেই বলেছি। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
এছাড়া জটিল কোন মেডিকেল প্রবলেম থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ